আজকে দাড়ি রাখাকে আমরা শুধুমাত্র হুজুরদের কাজ বলে পরিত্যাগ করেছি, মাদ্রাসা পড়ুয়াদের একচ্ছত্র সম্পত্তি বলে গণ্য করি, দুনিয়াবি শিক্ষিতদের কাছে দাড়ি রাখা ও টাখনুর উপর কাপড় পরা যেন তাদের স্মার্টনেসের পথে বিরাট এক বাধা। দাড়ি ও টাখনুর উপর কাপড় পরা যে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনেক বড় একটি হুকুম তা আমরা কেয়ারই করি না। পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর মানুষটির দাড়ি ছিল, সবচেয়ে স্মার্ট মানুষটির জামা টাখনুর উপরে ছিল, মাথায় ছিল টুপি আর পাগড়ি, গায়ে ছিল লম্বা ঢিলেঢালা জামা (পাঞ্জাবি/জুব্বা)।
কিছু সুন্নাহ আবশ্যিক তথা ওয়াজিব যা আদায় না করলে গুনাহ হবে আর কিছু সুন্নাহ আদায় না করলে গুনাহ হবে না কিন্তু রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উম্মাত হিসেবে আদায় করা আমাদের বিবেকের দাবি, ঈমানের দাবি।
“যে ব্যক্তি আমার সুন্নাতকে মুহাব্বত করল সে যেন আমাকেই মুহাব্বত করল। আর যে আমাকে মুহাব্বত করল সে আমার সাথে জান্নাতে বসবাস করবে।”(তিরমিযী, মিশকাত)
হযরত আনাস (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "যে আমার সুন্নতের পরোয়া করবে না সে আমার উম্মত নয়।" (বুখারী, মুসলিম)
দাড়ি রাখার সীমানাঃ
দাড়ি রাখা ওয়াজিব। কমপক্ষে এক মুষ্টি রাখা ওয়াজিব, এর চেয়ে কম রাখা নাজায়েজ। বেশি রাখা জায়েজ। দাড়ির চৌহদ্দি হলো গালের শেষ ভাগে এবং গলার শুরু ভাগে বাম কান থেকে ডান কান পর্যন্ত বিস্তৃত লম্বা হাড্ডিতে গজানো চুল হলো দাড়ির সীমারেখা। বাকিটা দাড়ি নয়। থুতনির উপরের ছোট চুল কাটাও উচিত নয়। [মিশকাতঃ ২/৩৮০, আবু দাউদ ১/৮৩]
ফাতওয়ায়ে শামী-৯-৫৮৩৪,ফাতওয়ায়ে আলমগীরী-৫/৩৫৮৫, আল বাহরুর রায়েক-২/৪৯০৬. ফাতওয়ায়ে মাহমুদিয়া-২৭/৪৮৪, কিফায়াতুল মুফতী-৯/১৭৫
আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের সকল ইমামগণের সর্বসম্মতিক্রমে দাড়ি লম্বা রাখা ওয়াজিব এবং তা কমপক্ষে এক মুষ্টি পরিমান হতে হবে ।
এ ব্যাপারে চার মাযহাবের সকল ইমামগণের ইজমা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
হাদীসের আলোকে দাড়ির হুকুমঃ
উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, দশটি বিষয় ‘ফিতরাতে’র অন্তর্ভুক্ত : মোচ কাটা, দাড়ি লম্বা রাখা, মিসওয়াক করা, নাকে পানি দেওয়া, নখ কাটা, চামড়ার ভাঁজের জায়গাগুলো ধৌত করা, বগলের নীচের চুল তুলে ফেলা, নাভীর নীচের চুল মুন্ডানো, (বাথরুমের প্রয়োজন পূরণের পর) পানি দ্বারা পরিচ্ছন্নতা অর্জন করা। বর্ণনাকারী বলেন, দশম বিষয়টি আমি ভুলে গেছি, যদি না তা হয় ‘কুলি করা।’ [সহীহ মুসলিম]
আরবীতে ‘ফিতরাত’ শব্দের অর্থ স্বভাব। আল্লাহ রাববুল আলামীন যে উত্তম মানবীয় স্বভাব সৃষ্টি করেছেন তার সর্বোত্তম নিদর্শন নবী ও রাসূলগণ। এ কারণে ‘ফিতরাত’ শব্দটির অর্থ করা হয়েছে আদর্শ ও অনুকরণীয় স্বভাব, তথা নবী ও রাসূলগণের স্বভাব।
তো হাদীস শরীফ থেকে বোঝা যাচ্ছে, মোচ কাটা ও দাড়ি রাখাই হচ্ছে পুরুষের স্বাভাবিক অবস্থা এবং সকল নবী-রাসূলের সুন্নাহ ও আদর্শ, যাঁদের অনুসরণের আদেশ কুরআন মজীদে করা হয়েছে।
এই হাদীস থেকে আরো বোঝা যায়, দাড়ি মুন্ডানো হচ্ছে একটি বিকৃতি, কিন্তু ব্যাপক বিস্তারের কারণে অন্য অনেক বিকৃতির মতো এটাও এখন স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে; বরং পুরুষের শ্মশ্রূমন্ডিত স্বাভাবিক রূপটিই এখন দ্বিধা ও সংকোচের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত,রাসূল স. ইরশাদ করেছেন, তোমরা গোঁফ কাট এবং দাঁড়ি লম্বা কর, আর অগ্নিপূজকদের বিরোধিতা কর।(মুসলিম শরীফ,১/১২৯)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত। রাসূল স. ইরশাদ করেন, মুশরিকদের বিরোধিতা কর, দাঁড়ি লম্বা কর, আর গোঁফ ছোট কর।(বুখারী শরীফ- ২/৮৭৫,মুসলিম)
হুজুর স. বলেছেন যে, তোমরা ভালভাবে গোঁফকাট এবং দাড়ি বাড়াও। (বুখারী শরীফ)
হযরত আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, রাসূল স. ইরশাদ করেন, দাড়ি বাড়াও, গোঁফ কাট এবং এক্ষেত্রে ইহুদী-খ্রীষ্টানদের সাদৃশ্য অবলম্বন করো না। (মুসনাদে আহমদ)
বিখ্যাত তাবেয়ী ইমাম উবায়দুল্লাহ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে উতবা রাহ. বলেন, জনৈক অগ্নিপূজক আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসেছিল। তার দাড়ি মুন্ডানো ছিল ও মোচ লম্বা ছিল। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘এটা কী?’ সে বলল, ‘এটা আমাদের ধর্মের নিয়ম।’ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘কিন্তু আমাদের দ্বীনের বিধান, আমরা মোচ কাটব ও দাড়ি লম্বা রাখব।’
-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ১৩/১১৬-১১৭, হাদীস : ২৬০১৩
উল্লেখ্য, পারস্য সম্রাটের উদ্দেশে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পত্র পাঠিয়েছিলেন। এ ঘটনা সহীহ বুখারীতে আছে। ইমাম উবায়দুল্লাহ ইবনে আবদুল্লাহ রাহ.-এর সূত্রেই তা বর্ণিত হয়েছে। তবে সেখানে তা আছে সংক্ষেপে। এ ঘটনা বিস্তারিতভাবে আছে ইতিহাসের কিতাবে। ইমাম ইবনে জারীর তবারী রাহ. যায়েদ ইবনে আবী হাবীব রাহ.-এর সূত্রে তা বর্ণনা করেছেন। তাতে আছে,
ইয়েমেনের শাসকের পক্ষ থেকে দু’জন লোক আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এল। তাদের দাড়ি মুন্ডানো ছিল এবং মোচ লম্বা ছিল। তাদের চেহারার দিকে তাকাতেও আল্লাহর রাসূলের কষ্ট হচ্ছিল। তিনি তাদেরকে বললেন, তোমাদের মরণ হোক! এ কাজ করতে কে তোমাদেরকে বলেছে? তারা বলল, আমাদের প্রভু (কিসরা) আমাদেরকে আদেশ করেছেন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, কিন্তু আমার রব আমাকে আদেশ করেছেন, দাড়ি লম্বা রাখার ও মোচ খাটো করার।
-আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ৩/৪৫৯-৪৬০
কোনো কোনো হাদীসে দাড়ি লম্বা রাখার আদেশের সাথে মুশরিকদের বিরোধিতার কথাও বলা হয়েছে। এ থেকে বোঝা যায়, দাড়ি যেমন শরীয়তের একটি বিধান তেমনি তা মুসলমানের পরিচয় চিহ্ন, যার দ্বারা মুমিন-মুসলমানকে প্রথম দৃষ্টিতেই আলাদা করে চেনা যাবে। এটি মুসলমানের জাতীয় চেতনাবাহী একটি বিষয়।
রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দাড়িঃ
১) হযরত আলী রাঃ রাসূল সাঃ এর বর্ণনা দিতে গিয়ে উল্লেখ করেন যে,“তিনি অনেক বড় দাড়ির অধিকারী ছিলেন। {সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৬৩১১,মুসনাদে আহমাদ,হাদীস নং-৯৪৬}
২) হযরত জাবির বিন সামুরা রাঃ বলেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দাড়ি ছিল বেশি বা ঘন। {সহীহ মুসলিম,হাদীস নং-৬২৩০,মুসনাদে আবী ইয়ালা, হাদীস নং-৭৪৫৬}
দাড়ি কাটার হুকুমঃ
এক মুষ্ঠির অতিরিক্ত অংশ কাটার সুযোগ শরীয়তে রয়েছে। হাদীসের কিতাবে পাওয়া যায়, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. ও হযরত আবু হুরায়রা রা. এক মুষ্ঠির অতিরিক্ত অংশ কেটেছেন।
আবু যুরআ রাহ. বলেন, আবু হুরায়রা রা. তাঁর দাড়ি মুঠ করে ধরতেন। এরপর এক মুষ্ঠির অতিরিক্ত অংশ কেটে ফেলতেন।-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ১৩/১১২, হাদীস : ২৫৯৯২; ২৫৯৯৯
নাফে রাহ. বলেন, আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. মুষ্ঠির অতিরিক্ত দাড়ি কেটে ফেলতেন।-প্রাগুক্ত হাদীস : ২৫৯৯৭
হাসান বসরী রাহ. বলেন, তাঁরা (সাহাবা-তাবেয়ীগণ) মুষ্ঠির অতিরিক্ত দাড়ি কাটার অবকাশ দিতেন।-প্রাগুক্ত ১৩/১১২, হাদীস : ২৫৯৯৫
কিন্তু কোনো সহীহ বর্ণনায় এক মুষ্ঠির ভিতরে দাড়ি কাটার কোনো অবকাশ পাওয়া যায় না।
আর ইবনে ওমর রাঃ যখন হজ্ব বা ওমরা করতেন, তখন তিনি তার দাড়িকে মুঠ করে ধরতেন, তারপর অতিরিক্ত অংশ কেটে ফেলতেন। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৫৫৩}
এখানে যদিও হজ্ব ওউমরার সময়ের কথা বলা হয়েছে, কিন্ তুমুহাদ্দিসীনরা বলেন তিনি তা সব সময়ই করতেন । এ ছাড়াও আবু দাউদ ও নাসাঈর বর্ণনায় ইবনে উমরের(রাঃ) হজ্ব ও উমরা ছাড়া অন্য সময়েও দাড়ি এক মুঠের বেশীটুকু কেটে ফেলার কথা রয়েছে।
(ফাতহুল বারীঃ খন্ড-১০পৃঃ ৩৬২)
কোন হাদীসেই সরাসরি দাড়ি এক মুষ্ঠি পরিমাণ রাখার কথা উল্লেখ নেই , শুধুমাত্র লম্বা করার কথা উল্লেখ রয়েছে। তবে সাহাবায়ে কেরাম থেকে এক মুষ্ঠি পরিমাণ দাড়ি রাখা প্রামাণিত আছে।
দাড়ি সম্পর্কিত হাদীস বর্ণনাকারী সাহাবী আবু হুরাইরা ইবনে উমর (রাঃ) প্রমুখ গণ দাড়ি এক মুষ্ঠি পরিমাণ রাখতেন । তাই এ ব্যাপারে তাঁদের আমল আমাদের জন্য দলীল । এর কারণ হল যে বিষয়ে হাদীসে সরাসরি পাওয়া যায় না সে বিষয়ে সাহাবায়ে কেরামের আমল শরীয়তের প্রমাণ হিসেবে সাব্যস্ত হয়। কেননা তারা হলেন হাদীসে রাসূলের (সাঃ) আমলী নমুনা।
সুতরাং দাড়ি কমপক্ষে এক মুষ্ঠি পরিমাণ হওয়া প্রত্যক্ষভাবে সাহাবায়ে কেরাম থেকে প্রমাণিত হলেও পরোক্ষভাবে তা রাসূল (সাঃ) থেকেই প্রমাণিত ।
হযরত উমর (রাঃ) তো নিজেই এক ব্যক্তির দাড়ি ধরে এক মুঠের অতিরিক্ত অংশটুকু নিজেই কেটে দিয়েছিলেন ।(ফাতহুল বারীঃ খন্ড-১০ পৃঃ ৩৬২)
ইবনে উমর (রাঃ) ছিলেন রাসূলের (সাঃ) আদর্শের পুঙ্খনুভাবে এবং পূর্ণ অনুসারী । তাই তিনি যা করেছেন তা রাসূল (সাঃ)থেকেই জেনে-শুনে করেছেন ।
উপরোক্ত দু’জন মহান সাহাবী ব্যতীত আবু হুরাইরা ,জাবির (রাঃ) প্রমুখ সাহাবীথেকে ও দাড়ির এক মুঠের অতিরিক্ত অংশটুকু কেটে ফেলার কথা পাওয়া যায় । এথেকে দাড়ি কমপক্ষে এক মুঠ পরিমাণ রাখার বিষয়টি প্রমাণিত হয়।
দাড়ি না রাখা ,মুন্ডিয়ে ফেলা বা একমুষ্ঠির কম রাখা হারাম ও কবীরা গুনাহ। যে দাড়ি মুন্ডায় বা এক মুঠের চেয়েও ছোট করে ফেলে তার আমলনামায় পুনরায় দাড়ি এক মুঠ পরিমাণ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত গুনাহ লিখা হতে থাকে। কেননা শারীয়াতের হুকুম হল-দাড়ি কমপক্ষে এক মুঠ পরিমাণ রাখা। তাই এর চেয়ে দাড়ি ছোট করে ফেললে বা মুন্ডিয়ে ফেললে যতক্ষণ পর্যন্ত দাড়ি এক মুঠ পরিমাণ না হবে ততক্ষন পর্যন্ত সে শরীয়তের হুকুম অমান্যকারী সাব্যস্ত হবে এবং তার নামে গুনাহ লিখা হতে থাকবে । অন্যান্য গুনাহ সাময়িক ও অস্থায়ী, কিন্তু দাড়ি ছোট করা বা মুন্ডানোর গুনাহ দীর্ঘস্থায়ী ,যে ব্যক্তি দাড়ি মুন্ডায় বা ছোট করে (এক মুঠের চেয়ে ) সে ফাসিক। (একজন মুফতি সাহেবের ফাতাওয়া)
পুরুষের টাখনুর নিচে কাপড় ঝুলিয়ে পরার ব্যাপারে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সতর্কবাণীঃ
টাখনুর নিচে কাপড় ঝুলানো কবীরা গুনাহ। কিন্তু কেউ কেউ মনে করেন অহংকারের নিয়তে করলে হারাম। যদি অহংকারের নিয়ত না থাকে তাহলে কোনো অসুবিধা নেই। মনে রাখবেন, এই ধারণা ঠিক নয়। অহংকারের নিয়ত না থাকলেও এটা নাজায়েয। আর অহংকারের নিয়তে করা তো আরো মারাত্মক গুনাহ। হাদীস শরীফে এ কাজটিকেই অহংকারের আলামত বলা হয়েছে। সুতরাং এ থেকে বিরত থাকা জরুরি।
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, টাখনুর নিচের যে অংশ পায়জামা বা লুঙ্গী দ্বারা ঢাকা থাকে তা জাহান্নামে যাবে। {সহীহ বুখারী,হাদীস নং-৫৭৮৭,৫৪৫০, সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-৫৩৩১}
তিন শ্রেণীর লোকের সাথে আল্লাহ্ তায়ালা কিয়ামতের দিন কথা বলবেন না, তাদেরদিকে তাকাবেন না এবং তাদেরকে পবিত্র করবেন না। বরং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। তারা হল টাখনুর নিচে কাপড় পরিধানকারী, দান করে খোটা দানকারী ও মিথ্যাশপথের সাথে পণ্য বিক্রয়কারী। [সহিহ মুসলিমঃ ১/২০১, তিরমিযী,আবু দাউদ ও ইবন মাজাহ্)।]
জাবের ইবন সুলাইম রা.হতে বর্ণিত,রাসূল সা.বলেন, “টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে কাপড় পড়ার ব্যাপারে সাবধান হও। কারণ,তা অহংকারের অন্তর্ভুক্ত। আর আল্লাহ অহংকার করাকে পছন্দ করেন না।” (আবু দাঊদ। সনদ সহীহ)।
এটা ভুল ধারণা যে, পশ্চিমা ফ্যাশনের দ্বারা ব্যক্তির সম্মান বৃদ্ধি পায়। বাস্তবতা এই যে, মুসলমান যদি নিজেদের সভ্যতা-সংস্কৃতি ছেড়ে অন্যদের সংস্কৃতি ধারণ করে তবে এটাই তার লাঞ্ছনার কারণ। নিজেদের মাঝেও সে লাঞ্ছিতহবে এবং অন্যদের কাছেও।
শেষ করছি এই যুগের সৌদির একজন প্রখ্যতা আলিম শাইখ বিন বায(রঃ) এর একটি ঘটনা দিয়ে...............
শাইখ ইবনে বায (রাহঃ) যখন তার শেষ জীবনে উনার ক্যান্সার ধরা পড়ে, তখন তিনি চিকিৎসার জন্য আমেরিকাতে যান। তখন ডাক্তার তাকে বলেন, surgical operation এর জন্য শরীরের সব পশম ফেলে দিতে হবে ! একটি পশম ও রাখা যাবে না! শাইখ ইবনে বায বলেন, দাঁড়িও কি রাখা যাবে না! ডাক্তার জবাবে বলেন, না! তখন, শাইখ ইবনে বায বলেন, মৃত্যু অবধারিত! আমাকে সৌদিতেই পাঁঠিয়ে দেওয়া হোক। কিন্তু আমি দাঁড়িবিহীন অবস্থায় মহান আল্লাহর কাছে সাক্ষাত করবো, এই ব্যাপারে লজ্জিত এবং ভীত। আল্লাহু আকবর।
দুটি মাদ্রাসার ইফতা বিভাগ থেকে প্রকাশিত ফাতাওয়ার আলোকে নোটটি লিখা। আল্লাহ সুবাহানু ওয়া তাআলা আমাদেরকে সঠিক উপলব্ধি দান করুন এবং সকল সংশয় ঝেড়ে ফেলে ইসলামী পোশাক খুশিমনে গ্রহণ করার তাওফীক দান করুন।
2 October 2014 at 16:06 · Public
More
Like
Share
LikeLoveYou, Muhammad Nasim and 233 others
Mehedi Hasan Mahi
আল্লামা খতীব বাগদাদী রাহিমাহুল্লাহ.-এর কিতাব আলজামে (১/২৭০-১৭২) এ এরকম একাধিক ঘটনা রয়েছে যে, কোনো মুহাদ্দিস ইন্তেকাল করলেন। অন্য কোনো মুহাদ্দিস তাকে স্বপ্নে দেখলেন যে,তিনি সবুজ-সুন্দর কাপড় পরে নায-এর সাথে পায়চারী করছেন। তাকে জিজ্ঞাসা করা হল, আল্লাহ আপনার সাথে কী মুআমালা করেছেন? তিনি বললেন, আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। প্রশ্ন করা হল, কী আমলের বদৌলতে? তিনি বললেন, আমি হাদীস লিখতাম। যখনই আমার সামনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নাম আসত আমি প্রত্যেক বারই (পূর্ণাঙ্গভাবে) সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লিখতাম। আল্লাহ শুধু এরই বদৌলতে আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। কবি খুব সুন্দর বলেছেন- ﻣﺎ ﮨﺮﭼﮧ ﺧﻮﺍﻧﺪﮦ ﺍﻳﻢ ﻓﺮﺍﻣﻮﺵ ﻛﺮﺩﮦ ﺍﻳﻢ ﺍﻻ ﺣﺪﻳﺚ ﻳﺎﺭ ﻛﮧ ﺗﻜﺮﺍﺭ ﻣﻰ ﻛﻨﻴﻢ অতএব যতবারই নবীজীর নাম আসুক সংক্ষেপে নয়; বরং পূর্ণাঙ্গভাবে সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লিখা উচিত। আল্লাহ আমাদের সবাইকে কবুল করুন আমীন......
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন