হাম্বলী মাজহাবের বিখ্যাত ইমাম ইবনুল জাওযী রহ. বলেন,
سمعوا أن الله تعالى خلق آدم على صورته، فأثبتوا له صورة ووجها زائدا على الذات، وعينين وفماً ولهوات، وأضراسا وأضواء لوجهه هي السبحات، ويدين وأصابع وكفا وخنصرا وإبهاما وصدرا وفخذا وساقين ورجلين، ....، فسموها بالصفات تسميةً مبتدعةً لا دليل لهم في ذلك من النقل ولا من العقل،....، سموا الأخبار أخبار صفات، وإنما هي إضافات، وليس كل مضاف صفة، فإنه قال سبحانه وتعالى ﴿وَنَفَخْتُ فِيهِ مِن رُّوحِي﴾، وليس لله صفة تسمى روحا، فقد ابتدع من سمى المضاف صفة،
তারা একটা হাদীস শুনেছে। আল্লাহ তায়ালা আদম আ.কে আদমের নিজ আকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন। এই হাদীস শুনে তারা আল্লাহর জন্য আকৃতি, সত্তার অতিরিক্ত চেহারা, দু’চোখ, মুখ, চোয়াল, মাড়ির দাঁত, চেহারার আলো ও ঔজ্জ্বল্য, দু’হাত, আঙ্গুলসমূহ, হাতের পিঠ, কনিষ্ঠাঙ্গুল, বৃদ্ধাঙ্গুল, বুক, রান, পায়ের পিন্ডলী এবং দু’পা সাব্যস্ত করেছে। এগুলোকে তারা বিদয়াতী (নব-আবিষ্কৃত) পদ্ধতিতে সিফাত বা আল্লাহর গুণ নাম দিয়েছে। এগুলো সিফাত হওয়ার ব্যাপারে না শরীয়তের কোন দলিল আছে, না যৌক্তিক কোন প্রমাণ আছে। এজাতীয় হাদীসগুলোকে তারা আল্লাহর গুণবাচক হাদীস নামকরণ করেছে। অথচ এগুলো হলো ইজাফাত বা সম্পৃক্তকরণ (অথর্াৎ বিশেষ্যকে অন্য একটি বিশেষ্য বা সবর্নামের দিকে সম্পৃক্ত করা হয়। যেমন, হাসানের বই। বইটি হাসানের দিকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে মাত্র। বই হাসানের কোন গুণ বা সিফাত নয়। একইভাবে হাসানের হাত। হাত হাসানের কোন গুণ বা সিফাত নয়। যেটি কোন ভাষাতেই গুণ নয়, সেটিকে গুণ বলার কোন শরয়ী ও ভাষাগত যৌক্তিকতা নেই)
একটি বিশেষ্যেক অন্য একটি বিশেষে্যর দিকে সম্পৃক্ত করলেই সেটি গুনবাচক হয় না। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, আমি তার মাঝে আমার রুহকে ফুৎকারের মাধ্যমে প্রবেশ করিয়েছি। আল্লাহর রুহ বা আত্মা নামে কোন সিফাত নেই। এরা ইজাফাত বা সম্পৃক্তকরণকে সিফাত বলার নতুন বিদয়াতী পদ্ধতি আবিষ্কার করেছে।
(দাফউ শুবাহিত তাশবীহ, পৃ.৯-১১, ইমাম ইবনুল জাওযী রহ.)
ইমাম তাজুদ্দীন সুবকী রহ.বলেন,
وهذه الأشياء التي ذكرناها، من الوجه واليد والساق والقدم والجنب والعين. هي عند أهل اللغة أجزاء لا أوصاف، فهي صريحة في التركيب للأجسام، فذِكْرُ لفظ الأوصاف تلبيس، وكل أهل اللغة لا يفهمون من الوجه، والعين، والقدم إلا الأجزاء، ولا يفهم من الاستواء بمعنى القعود إلا أنه هيئة المتمكن، ولا من المجيء والإتيان والنزول إلا الحركة الخاصة بالجسم. وأما المشيئة والعلم والقدرة ونحوها فهي صفات ذات.
অথর্: চেহারা, হাত, পায়ের পিন্ডলী, পা, দেহের পাশ, চোখ এগুলো সবই ভাষাবিদদের নিকট দেহের অংশ, এগুলো কোন সিফাত বা গুণ নয়। দেহের অবকাঠামো গঠনে এগুলো খুবই স্পষ্ট। এগুলো সিফাত বলা এক ধরণের ধোঁকা। কোন ভাষার কেউ-ই চেহারা, চোখ, পা দ্বারা দেহের অংশ ছাড়া আর কিছুই বোঝে না। এবং বসার অথর্ে ইস্তেওয়া বলতে অবস্থানকারী একটি বিশেষ আকৃতি বোঝায়। একইভাবে আগমন, প্রস্থান, অবতরণ এগুলো দ্বারা দেহের একটি বিশেষ গতি বোঝায়। অপর পক্ষে ইচ্ছা, জ্ঞান, ক্ষমতা এগুলো হলো সত্তার গুণ।
[আস-সাইফুস সাকীল, পৃ.১৬৭]
বিখ্যাত ইমামদ্বয়ের বক্তবে্যর সারমমর্ হলো,
পবিত্র কুরআন ও হাদীসে আল্লাহর দিকে যে হাত পা সম্পৃক্ত করা হয়েছে, এগুলো সবই ইজাফাত হিসেবে এসেছে। এগুলো কোনটিই সিফাত বা গুণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়নি। সুতরাং হাতকে গুণ বলা একধরনের ধোঁকা। পৃথিবীর কোন ভাষায় হাত,পা, চোখ, পায়ের পিন্ডলী কোনকালেই গুণ হিসেবে ব্যবহৃত হয় না। সুতরাং ইজাফাতকে গুণ বলার শরয়ী ও ভাষাগত কোন ভিত্তি নেই। ইবনুল জাওযী রহ. এর মতে এটি একটি বিদয়াতী পন্থা।
সালাফীদের আকিদার একটি মৌলিক নীতি হলো, হাত, পা, চোখ এগুলোকে তার বাহি্যক ও সরল অথর্ে বিশ্বাস করতে হবে।
পৃথিবীর কোন ভাষায় হাত, পা, চোখ এগুলো সরল অথর্ে কোন গুণ বোঝায় না। হাত বললে আমরা কখনও কারও গুণ বুঝি না। সুতরাং হাতের সরল অথর্র্ কখনই গুণ হতে পারে না। হাতকে গুণ বলার অথর্ই হলো, সালাফীরা তাদের এই মূলনীতি সম্পূণর্ভাবে লঙ্ঘণ করেছে। সালাফীরা হাতের সরল অথর্েই যদি বিশ্বাস করে, তাহলে একটিমাত্র উদাহরণ দেখাক, যেখানে হাত সরল অথর্ে গুণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। হাসানের হাত বললে কখনও হাত হাসানের বিশেষণ হয় না। এটি খুবই সাধারণ ব্যাপার।
এগুলো সিফাত বা গুণ না হওয়া সত্ত্বেও এগুলোক গুণ বলে হয়তো সালাফীরা সাধারণ মানুষকে ধোকা দিচ্ছে না হয়, তারা সরল অথর্ে বিশ্বাসের যে মূলনীতি বলেছে, এটি সম্পূণর্ ভুয়া একটি মূলনীতি। বিখ্যাত ইমাম তাজুদ্দীন সুবকী রহ. তো স্পষ্ট করে বলেছেন, হাত, পা ও চোখকে সিফাত বলাই এক ধরণের ধোঁকা।
সালাফীদের আরেকটি মূলনীতি হলো,
نثبت ما أثبت الله ورسوله و ننفي ما نفي الله ورسوله
অথর্:আল্লাহ ও তার রাসূল আল্লাহর জন্য যা কিছু সাব্যস্ত করেছেন, আমরা সেটি আল্লাহর জন্য সাব্যস্ত করি, আল্লাহ ও তার রাসূল আল্লাহকে যা থেকে মুক্ত ঘোষণা দিয়েছেন, আমরাও সেগুলো থেকে আল্লাহকে মুক্ত বলি।
সালাফীদের এই মূলনীতিটি দেখতে বেশ সুন্দর। একজন সাধারণ পাঠক খুব সহজেই তাদের এই মূলনীতিতে ধোঁকায় পড়বে। তবে বাস্তবতা হলো, এটি দেখতে যতো সুন্দর এর চেয়ে বেশি বাস্তবতা বিবজর্িত। শরীয়তের দৃষ্টিতে এই মূলনীতির না কোন ভিত্তি আছে, না যৌক্তিক কোন প্রমাণ আছে। একেবারে অন্ত:সারশূন্য ভিত্তিহীন একটি মূলনীতি।
আমার সামনে তারা যখন এই মূলনীতি বলে তখন আমি বেশ খুশি হই। এদেরকে যখন জিজ্ঞেস করি, বোখারী শরীফের হাদীসে আল্লাহ তায়ালা নিজের সম্পকর্ে বলেছেন, আমি বান্দার হাত হয়ে যায়, আমি বান্দার চোখ হয়ে যায়। এগুলো তো আল্লাহ তায়ালা নিজের জন্য সাব্যস্ত করেছেন। সুতরাং এই হাদীসের উপর আপনাদের উপযূর্ক্ত মূলনীতি ব্যবহার করুন। তখন তাদের পরিস্থিতি থাকে উপভোগ করার মতো। মুহূতর্েই সমস্ত মূলনীতি ভুলে যায়।
তাদের এই অন্ত:সারশূণ্য মূলনীতির উপর পরবতর্ীতে বিস্তারিত লিখবো ইনশা আল্লাহ।
মূলকথা হলো, সালাফীদের এই মূলনীতি সম্পূণর্ অবাস্তব ও তাদের কল্পনা প্রসূত। আল্লাহ কোথায় বলেছেন, হাত, পা, চোখ এগুলো আমি নিজের জন্য সাব্যস্ত করেছি। এগুলো আমার সিফাত বা গুণ। আল্লাহর রাসূল স.কোথায় বলেছেন, হাত,পা, এগুলো যখন আমি ব্যবহার করি, তখন এগুলো দ্বারা আল্লাহর সিফাত বা গুণ উদ্দেশ্য নেই। সাধারণ আরবী ব্যবহার থেকে আপনারা কীভাবে বুঝলেন যে, এগুলো আল্লাহ তায়ালা তার গুণ বা সিফাত সাব্যস্তের জন্য ব্যবহার করেছেন। এগুলো দ্বারা যে আল্লাহ নিজের সিফাত বুঝিয়েছেন, এই কথাটা কোথায় পেলেন? আপনাদের কাছে কি নতুনভাবে ওহী এসেছে যে, আল্লাহর দিকে কিছু সম্পৃক্ত হলেই সেটি আল্লাহর গুণ বা সিফাত হবে?
আপনারা কীভাবে জানলেন যে, আল্লাহ তায়ালা এগুলো নিজের সিফাত প্রমাণের জন্য ব্যবহার করেছেন।
সালাফী ভাইয়েরা হয়তো বলবেন, আল্লাহর হাত, আল্লাহর চোখের কথা যেহেতু আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বলেছেন, সুতরাং আমরা বলবো আল্লাহর শান অনুযায়ী হাত আছে। এটা সিফাত না অঙ্গ, সেগুলো আমাদের জানার প্রয়োজন নেই। আল্লাহ বলেছেন, আল্লাহর হাত, আমরাও বলবো আল্লাহর হাত। সুতরাং সিফাত না কি অন্য কিছু সেই বিতকর্ে আমরা যেতে চাই না।
আমি বলবো, এতো ব্যস্ত হওয়ার কিছু নেই। একটু ধৈয্যর্ ধরুন। আমি পবিত্র কুরআনের কিছু আয়াত দেখাই। দয়া করে আপনার মূলনীতির উপর অটলল থাকবেন। আশা করি পিছলে যাবেন না।
সূরা আল-ইমরানের ৭২ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,
وَقَالَتْ طَائِفَةٌ مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ آمِنُوا بِالَّذِي أُنْزِلَ عَلَى الَّذِينَ آمَنُوا وَجْهَ النَّهَارِ وَاكْفُرُوا آخِرَهُ لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ
এই আয়াতে আল্লাহ তায়ালা “ওয়াজহান নাহার” শব্দ ব্যবহার করেছেন। আরবীতে ওয়াজহুন শব্দের অথর্ চেহারা। আর নাহার শব্দের অথর্ দিন। ওয়াজহান নাহার এর অথর্ হলো দিনের চেহারা।
“দিনের চেহারা” এর কথা আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে যেহেতু বলেছেন, সুতরাং দিনের চেহারা আছে। সালাফীদের মূলনীতি অনুযায়ী বলতে হবে, দিনের শান অনুযায়ী দিনের চেহারা আছে।
আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনের সূরা ইউনুসের ২য় নং আয়াতে ইরশাদ করেছেন,
وَبَشِّرِ الَّذِينَ ءَامَنُوا أَنَّ لَهُمْ قَدَمَ صِدْقٍ عِنْدَ رَبِّهِمْ
এখানে আল্লাহ তায়ালা “কাদামা সিদকীন” শব্দ ব্য্যবহার করেছেন। আরবীতে কাদাম অথর্ হলো পা। এবং সিদক অথর্ হলো সত্য। “কাদামা সিদকীন” এর অথর্ হলো সতে্যর পা। সালাফীদের মূলনীতি অনুযায়ী বলতে হবে, আল্লাহ তায়ালা যেহেতু কুরআনের সতে্যর পায়ের কথা বলেছেন, সুতরাং সতে্যর পা রয়েছে। যদিও এর ধরণ আমাদের অজানা। তবে সতে্যর শান অনুযায়ী তার পা রয়েছে।
আল্লাহ তায়ালা সূরা বনী ইসরাইলের ২৪ নং আয়াতে বলেন,
وَاخْفِضْ لَهُمَا جَنَاحَ الذُّلِّ مِنَ الرَّحْمَةِ وَقُل رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا
অথর্: তোমরা পিতা-মাতার জন্য রহমতের ডানা বিছিয়ে দাও এবং বলো, হে আল্লাহ তায়ালা শিশুকালে আমাকে যেভাবে লালন করেছে, আপনি সেভাবে তাদেরকে রহমত ও লালন করুন।
এখানে আল্লাহ তায়ালা “জানাহাজ জুল্লি” শব্দ ব্যবহার করেছেন। জানাহ শব্দের অথর্ হলো ডানা। এবং জুল্রুন এর অথর্ হলো, বিনয় ও নম্রতা। সুতরাং জানাহাজ জুল্লি এর অথর্ হলো, নম্রতার ডানা। সালাফীদের মূলনীতি অনুযায়ী বলতে হবে, আল্লাহ তায়ালা যেহেতু কুরআনে জানাহাজ জুল্লি শব্দটি ব্যবহার করেছেন, এজন্য নম্রতারও ডানা রয়েছে। তবে আমরা এর ধরণ ও কাইফিয়ত জানি না। নম্রতার শান অনুযায়ী তার ডানা রয়েছে।
পবিত্র কুরআন সম্পকর্ে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,
لَا يَأْتِيهِ الْبَاطِلُ مِن بَيْنِ يَدَيْهِ وَلَا مِنْ خَلْفِهِ تَنزِيلٌ مِّنْ حَكِيمٍ حَمِيدٍ
অথর্: কুরআনের উভয় হাতের মাঝ থেকে এবং কুরআনের পিছন থেকে কোন ভুল-ভ্রান্তি আসে না। (সূরা ফুসসিলাত-৪২)
কুরআনের উভয় হাতের কথা যেহেতু আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, সুতরাং সালাফীদের মূলনীতি অনুযায়ী বলতে হবে, কুরআনের উভয় হাত আছে। তবে এর ধরণ বা কাইফিয়ত আমাদের অজানা। একইভাবে কুরআনের পিছন আছে। এরও ধরণ বা কাইফিয়ত আমাদের অজানা। কুরআনের শান অনুযায়ী তার দু’টি হাত রয়েছে। এর ধরণ অনুসন্ধান করা বিদয়াত।
এভাবে আরও অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে। সুতরাং সালাফী ভাইদের ব্যতিব্যস্ত হওয়ার প্রয়োজন নেই। আল্লাহর হাতের কথা আল্লাহ কুরআনের বলেছেন, সুতরাং আমরাও বলবো, এই মূলনীতি অনুযায়ী দিনের চেহারা, কুরআনের দুই হাত, সতে্যর পা, নম্রতার ডানার কথাও বলুন।
আপনাদেরকে এই মূলনীতি কে শেখালো যে, হাত কোন কিছুর দিকে সম্পৃক্ত হলেই সেটি তার গুণ বা সিফাত হয়? আল্লাহর দিকে হাত সম্পৃক্ত হলে যদি আল্লাহর হাত থাকা আবশ্যক হয়, তাহলে কুরআনের দিকে দুই হাত সম্পৃক্ত হয়েছে। কুরআনের দুই হাত আছে একথা বলুন। আল্লাহর দিকে চেহারা সম্পৃক্ত হলে যদি আল্লাহর চেহারা থাকা আবশ্যক হয়, তাহলে দিনের দিকে চেহারা সম্পৃক্ত হওয়ার কারণে বলুন, চেহারা দিনের একটি সিফাত বা গুণ। এর ধরণ আমরা জানি না...। একইভাবে নম্রতার ডানা সাব্যস্ত করুন।
আপনি যে মূলনীতি দিয়েছেন, “আল্লাহ নিজের জন্য যা সাব্যস্ত করেছেন, আমরাও আল্লাহর জন্য সেটি সাব্যস্ত করি”, আপনি কীভাবে জানলেন যে, আল্লাহর দিকে হাত সম্পৃক্ত হলেই আল্লাহর জন্য হাত সাব্যস্ত করা হয়? তাহলে কুরআনের দিকে হাত সম্পৃক্ত হলে কুরআনের হাত কেন সাব্যস্ত হয় না? অথচ দু’টোর একই শব্দ প্রণালী।
আল্লাহ নিজের দিকে চেহারা সম্পৃক্ত করলে আল্লাহর চেহারা সাব্যস্ত করা হয়, এই কথাটি আপনাকে কে বলল? এই মূলনীতি কুরআনের কোথায় আছে? রাসূল স. এর কোন হাদীসে এই মূলনীতি আছে।
মূলকথা হলো, সালাফীদের উক্ত মূলনীতিটি সম্পূণ অবাস্তব। সালাফীরা নিজেরাই কখনও এটি মানে না। প্রতিটি ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম করে। অথচ আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত তথা আশআরী-মাতুরীদিগণের বিরুদ্ধে অন্যায় বিষোদগার করে। অপপ্রচার চালায়, আশআরীরা আল্লাহর সিফাত অস্বীকার করে।
আশআরীদের দিকে আঙ্গুল উঠানোর আগে হাত আল্লাহর সিফাত সেটা প্রমাণ করুন। আল্লাহর দিকে হাত সম্পৃক্ত হলেই যে সেটা আল্লাহর জন্য সাব্যস্ত হবে এটা কোথায় পেয়েছেন? আগে তো প্রমাণ করুন। প্রমাণ না করেই অস্বীকার অস্বীকার করে জিকির করে কী লাভ। আপনাদের উদাহরণ তো চিলে কান নেয়ার মতো। এতো দুবর্ল ও ভঙ্গুর মূলনীতি নিয়ে আশআরীদের বিরুদ্ধে সীমাহীন বিষোদগারের দু:সাহস কীভাবে হয়, আল্লাহ ভালো জানেন।
খুবই সংক্ষেপে সালাফীদের আকিদার দু’টি মূলনীতি আলোচনা করা হলো। বিষয় দু’টি আরও বিস্তারিত আলোচনার দাবি রাখে। সুযোগ করে ইনশা আল্লাহ লিখবো। উক্ত মূলনীতি দু’টি সালাফীদের অধিকাংশ আকিদার কিতাবে রয়েছে। বিশেষভাবে ইবনে তাইমিয়া রহ ও তার ছাত্র ইবনুল কাইয়ি্যম রহ. এর কিতাবে রয়েছে। সালাফী আকিদার মূলনীতি হলেও এগুলো একেবারেই ভিত্তিহীন। সালাফী শায়খ ড.আব্দুল্লাহর জাহাঙ্গীর সাহেব তার আল-ফিকহুল আকবারের বিভিন্ন জায়গায় মূলনীতি দু’টি বিভিন্নভাবে উপস্থাপন করেছেন। যারা সরল বিশ্বাসে মূলনীতি দু’টি মেনে নিয়েছেন, আশা করি তাদের কাছে এর অসারতা স্পষ্ট হবে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন